অনলাইন ডেস্কঃ হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেটাই হবে তার ক্যারিয়ারের দুইশ’তম ওয়ানডে ম্যাচ। ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে অর্জন যেমন আছে, তেমনি আফসোসও আছে টাইগার ক্রিকেটের এই সাইলেন্ট হিরোর। কেমন ছিলো রিয়াদের পথচলা? এক নজরে দেখে নেওয়া যাক-
অনেকটা আড়ালেই থাকেন তিনি। মাশরাফী, সাকিব, তামিম, মুশফিকদের অর্জন নিয়ে যতোটা মাতামাতি হয়, সে তুলনায় তারটা নিয়ে হয় কম। পঞ্চপাণ্ডবের তালিকায় সবশেষ নামটাই যে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
পরিসংখ্যানের হিসেবে অর্জনের খাতায় বাকি চার পাণ্ডবের চেয়ে পিছিয়েই তিনি। তবে শুধু রান আর উইকেট সংখ্যা দিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বিচার করলে খুব বড় ভুল হবে। নিয়মিত খোঁজ খবর রাখা মানুষের দৃষ্টিতে তিনি বাংলার ক্রিকেটের সাইলেন্ট হিরো। বহু ম্যাচেই যে বাংলাদেশ দলের পার্শ্বনায়কের ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছেন রিয়াদ।
দু’একটা ম্যাচের ঘটনা মনে করিয়ে দেয়া যাক। ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক ছিলেন তিনিই। ১৮ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সেদিন। তবে তার চেয়েও বড় হয়ে উঠেছিলো, চরম উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শেষ ওভারে ১২ রান নিয়ে ম্যাচ জেতানোর মুহূর্তটা।
টাইগার ক্রিকেটের আরও বেশ কিছু সেরা ঘটনার মূলে আছে মাহমুদউল্লাহর নাম। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ডের দেয়া ২৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে, ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকেই দারুণ এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছিলো টাইগাররা। যার নেপথ্যে সাকিবের সঙ্গে ছিলেন মাহমুদউল্লাহও। দু’জনের সেঞ্চুরিতে ম্যাচটা ৫ উইকেটে জিতেছিলো বাংলাদেশ। আসরের সেমিফাইনালে উঠতে যে জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো।
সবশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট জয়েও সবচেয়ে বড় অবদান মাহমুদউল্লাহর। টেস্ট দলে যাকে দেড় বছর জায়গাই দেয়া হয়নি, বিপদের সময় তার দেড়শ’ রানের ইনিংসেই হয়েছে মান রক্ষা।
৫০ টেস্টে ৫ সেঞ্চুরি আর ৩৩.৪৯ গড়ে ২ হাজার ৯১৪ রান। টি-টোয়েন্টিতে আছে দেড় হাজার রান।
ওডিআইতে ১৯৯ ম্যাচে রান ৪৪৬৯। নামের পাশে সেঞ্চুরি মোটে ৩টি। ফিফটি ২৫টি।
ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করা মাহমুদউল্লাহই ২০১৫ বিশ্বকাপে তিন নম্বরে নেমে করেছিলেন টানা দুই সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের তাই আক্ষেপ থাকতেই পারে।
মাহমুদউল্লাহর হেরে যাওয়ার গল্পও আছে। আছে ভেঙে পড়ার গল্প। ২০১৬ ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টিতে ভারতের বিপক্ষে হারের আক্ষেপ মাহমুদউল্লাহ আর মুশফিকেরই তো সবচেয়ে বেশি। ৩ বলে ২ রান নিতে পারেননি তারা। ১ রানে হেরেছিলো দল। ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ২ রানের হারটাও নন স্ট্রাইকে থেকে দেখতে হয়েছে তাকে। তবে ক্যারিয়ারের দুইশ’তম ওয়ানডেতে নিশ্চয়ই হতাশ হতে চাইবেন না রিয়াদ। সূত্রঃ সময় নিউজ