অনলাইন ডেস্কঃ ভারতের রাজধানী দিল্লিতে স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। ১২ বছরের মধ্যে এপ্রিল মাসে রেকর্ড হওয়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এটি। এদিকে গুরগাঁওতে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। এটি শহরটিতে এ এযাবৎকালের এপ্রিল মাসে রেকর্ড হওয়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। খবর এনডিটিভির।
তাপমাত্রা বাড়তে থাকার পাশাপাশি রাজধানী দিল্লি ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা উল্লেখজনক হারে বেড়েছে। কয়লার সংকটের কারণে মেট্রো ট্রেন, হাসপাতালসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে দিল্লি সরকার।
২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল দিল্লিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর আবার গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় একই রকম সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। আর দিল্লির এ এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হলো ৪৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৪১ সালের ২৯ এপ্রিল এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
চলতি বছর মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে ভারতের বড় একটা অংশজুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। ২৮ এপ্রিল থেকে রাজধানী দিল্লিতে তাপপ্রবাহজনিত হলুদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, ‘আগামী তিন দিনে ভারতের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এরপর থেকে তা আবার ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমবে।’ দিল্লি ছাড়াও রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও ওডিশাতেও তাপপ্রবাহজনিত সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর বলছে, তাপপ্রবাহের কারণে নবজাতক, বয়স্ক মানুষ এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভোগা মানুষেরা মাঝারি মাত্রার স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন।
তাপমাত্রা বাড়তে থাকার পাশাপাশি রাজধানী দিল্লি ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা উল্লেখজনক হারে বেড়েছে। দিল্লিতে এই প্রথম এপ্রিল মাসে বিদ্যুতের চাহিদা ছয় হাজার মেগা ওয়াট ছাড়িয়েছে।
প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বাড়তি বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে অন্য রাজ্যগুলোও। রাজস্থানের কারখানাগুলোতে চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। গুজরাট ও অন্ধ্র প্রদেশেও বাড়তি চাহিদা অনুযায়ী, বিদ্যুৎ দিতে না পারায় শিল্পকারখানার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে কয়লার সংকটের কারণে মেট্রো ট্রেন, হাসপাতালসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে দিল্লি সরকার। দিল্লির বিদ্যুৎমন্ত্রী সত্যেন্দর জৈন পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য জরুরি বৈঠক করেছেন এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত কয়লা সরবরাহ নিশ্চিতের অনুরোধ জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছেন।
সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দাদরি-২ ও উঁচাহার বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ ব্যাহত হওয়ায় দিল্লি মেট্রো ও দিল্লির সরকারি হাসপাতালগুলোসহ অনেক জরুরি প্রতিষ্ঠানে ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হতে পারে।’
সত্যেন্দর জৈন বলেন, বর্তমানে দিল্লিতে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২৫-৩০ শতাংশ এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মেটানো হয়। আর এগুলো কয়লার ঘাটতির মধ্যে আছে।’ সূত্রঃ প্রথম আলো